চোখ উঠলে করনীয় কি?

 

চোখ উঠলে করনীয় কি? আমরা এর সঠিক করনীয় কি তা জানিনা। আপনার যদি এই রোগের সম্মুখিন হতে হয় বা আপনার যদি এই বিষয়ে জানা না থাকে তাহলে আজকের পোস্ট টি আপনার জন্য।

চোখ-উঠলে-করনীয়-কি

চোখ উঠলে কি করতে হয়? এই সম্পর্কে অবশ্যই আমাদের সকলকে জানতে হবে বা জেনে থাকা প্রয়োজন। তো প্রিয় পাঠক চোখ উঠলে কি করবেন তা জানতে শেষ অবশ্যই পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকুন।

পোস্ট সুচিপত্রঃ চোখ উঠলে কি করতে হয় - চোখ উঠলে কি করবেন

চোখ উঠা কি?

এই চোখ উঠা আমাদের অনেকের বা আশেপাশের অনেকের হয়ে থাকে। এমনকি এটা বাড়তেই থাকে। এটি খুবই পরিচিত এক রোগ। আমাদের পরিবারের বা আশেপাশে কারো হয় নি এই রকম ঘটনা খুবই কম। আবার আমাদের পরিবারের কারো হয়েছে তা থেকে আমরা অন্য কেউ আক্রান্ত হয় এটাও খুব কম হয়ে থাকে।

চোখ উঠা বলতে সাধারণত চোখের পাতার ত্বক বা চোখের আশপাশের অংশ ফুলে যাওয়াকে বোঝায়। এমনকি চোখ লাল হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতিকেই বোঝানো হয় চোখ উঠা। এই রগ হলে খুব বেশি চিন্তার কারন নেই। কারন এই রোগে কেউ আক্রান্ত হলে সেটা একা একা ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই ভালো হয়ে যায়।

এ চোখ উঠা রোগকে বলা হয়ে থাকে কনজাংটিভাইটিস। চোখের কনজাংটিভা নামক এক পর্দার প্রদাহই হলো এই রোগ। এই রোগে আক্রান্ত হলে প্রথমত চোখ ফুলে থাকে এবং লাল হয়ে থাকে। এই রোগ ভাইরাসজনিত ও ছোঁয়াচের ফলে হয়ে থাকে। তবে ক্ষেত্রবিশেষ এ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হয়।

চোখ উঠার কারন

চোখ উঠার মূল বা আসল কারন কি তা জানা খুবই কঠিন। কারন এটি বেশ কয়েকটি কারন হয়ে থাকে। তবে আমাদের চেষ্টা করতে হবে যে ঠিক কি কারনে আমাদের রোগটি হয়েছে। এটি সাধারনত ভাইরাস কিংবা ব্যকটেরিয়ার প্রভাবে আমাদের হয়ে থাকে। তবে এটি ছোঁয়াচের কারনে হয়েছে কি না সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এর বেশ কয়েকটি কারন হলোঃ

    • ধুলা, পরাগ, পশম বা কিছু খাবারের প্রতি এলার্জি হলে হতে পারে।
    • এলার্জির ফলে আমাদের চোখ লাল হয়ে যায় এবং ফুলেও যায়।
  • ইনফেকশন:
    • কনজাঙ্কটিভাইটিস (পিংক আই): চোখের শ্লেষ্মা ঝিল্লি নামক পর্দার প্রদাহ।
    • ডেমোডেক্স: চোখের পাপড়ির তলে ছোট ধরনের কোনো পরজীবীর ফলে।
  • শুষ্কতা:
    • দীর্ঘসময় কম্পিউটার স্ক্রীন বা ফোন ব্যবহারের কারণে চোখ শুষ্ক হয়ে চোখ উঠার মতো হয়ে যায়।
  • দূষণ বা ধোঁয়া:
    • বায়ু দূষণ, ধোঁয়া বা অন্যান্য পরিবেশগত কোনো কারণে চোখের এই সমস্যাহয়ে থাকে।
  • অস্তিত্বগত সমস্যা:
    • কিছু মানুষের চোখের পাতার মাংসপেশী দুর্বল থাকতে পারে। যা চোখের ওঠার অনুভূতি তৈরি করে থাকে।

এছাড়াও আরও নানা কারনে হতে পারে। যেমনঃ বাইরের কিছু চোখে ঢুকে গেলে, কেমিক্যাল বা রাসায়নিক কোনো পদার্থের কারনে বা চোখে লেন্স ব্যবহার করলেও এই রোগের সম্মুখিন হতে পারে। তবে এটি বিশেষ করে ভাইরাস এর কারনেই হয়ে থাকে।

চোখ উঠার লক্ষন

চোখ উঠলে করনীয় কি তা জানা প্রয়োজন ঠিক তেমনি এর লক্ষন কি তা আমাদের জানতে হবে। কারন এর লক্ষন কি তা না জানলে আমরা এর সঠিকভাবে প্রতিকার করতে পারবো না। তাই আবশ্যই আমাদের লক্ষন গুলো ভালোভাবে জানতে হবে। তাহলে বুঝতে পারবো যে আমাদের চোখ উঠেছে কি না এবং এর করনীয় কি। এর কয়েকটি লক্ষন হলোঃ

আরও পড়ুনঃ চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার

  1. চোখ ফুলে যাওয়া: চোখের পাতা বা চোখের আশপাশের অংশ ফুলে যেতে পারে। চোখ ব্যাথাও করে থাকে।
  2. লাল হয়ে যাওয়া: চোখের সাদা অংশ বা চোখের পাতার ত্বক লাল হয়ে থাকতে পারে।
  3. চুলকানি বা জ্বালা: চোখের মধ্যে চুলকানি, জ্বালা বা অস্বস্তি(খচখচ) বোধ হয়ে থাকে।
  4. পানি পড়া: চোখ দিয়ে ঘঙ্ঘন পানি পড়তে পারে।
  5. শুষ্কতা: চোখে শুষ্কত অনুভূতি হয়ে থাকে।
  6. দৃষ্টির সমস্যা: চোখ উঠে থাকলে দৃষ্টি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যেমন ঝাপসা দেখা।
  7. গাঢ় লাল দাগ: চোখের আশপাশে গাঢ় লাল দাগ দেখা যেতে পারে।

    উপরের লক্ষনগুলো মূলত দেখা এই রোগের কারনে। আমাদের চোখ উঠলে করনীয় অনেক রয়েছে। আর এইসব আপনার মধ্যে দেখা দিলে বুঝতে হবে যে চোখ উঠেছে। আর এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে অবশ্যই আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তা না হলে এটি মারাত্মক ক্ষতি সাধন করতে পাররে।

    চোখ উঠা রোগ কিভাবে ছড়ায়?

    চোখ উঠলে কি করতে হয় তা জানা যেমন গুরুত্বপূর্ণ ঠিক তেমনি এই রোগ ছড়ানোর কারন বা কিভাবে ছড়ায় সেটা জানাও জরুরি। কারন এই রোগ কিভাবে ছড়ায় তা না জানলে আমাদের এই রোগ থেকে পরিত্রান বা সতর্ক থাকা সম্ভব হবে না। আর আমরা সতর্ক না হলে এই রোগের বিস্তার বেড়েই চলবে এবং বাড়তেই থাকবে।

    এই রোগ বিশেষ করে কন্টাক্ট এর ফলে ছড়িয়ে থাকে। যেমন একটা উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি, যদি কারো এই রোগ হয়ে থাকে বা আপনজন কেউ এই রোগে আক্রান্ত হয় তাহলে তার সাথে স্বাভাবিক ভাবে মিলেমিশে থাকলে এর বিস্তার হতে পারে। তাছাড়া আরো বিশেষ যেসব কারন রয়েছে তা হলোঃ

    আরও পড়ুনঃ AI এর সুবিধা

    ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন:
    • কনজাঙ্কটিভাইটিস (পিংক আই): ব্যাকটেরিয়াল কনজাঙ্কটিভাইটিস চোখের মধ্যে খুব সহজে ছড়াতে পারে। সংক্রমিত ব্যক্তির চোখের সান্নিধ্য বা চোখের ভিতর থেকে নিঃসৃত পদার্থের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়।
    • অঙ্গসংযোগ: সংক্রামিত হাত, তোয়ালে বা অন্যান্য ব্যক্তিগত ব্যবহৃত জিনিসের মাধ্যমে এই রোগ ছড়াতে পারে।
    ভাইরাল ইনফেকশন:
    • ওয়ার্ট ভাইরাস: চোখে  ভাইরাসজনিত ইনফেকশন। যেমন হেরপিসের ভাইরাস চোখের সমস্যার কারণ হতে পারে। ভাইরাসের মাধ্যমে এই রোগ ছড়িয়ে থাকে।
    • প্রাণঘাতী ভাইরাস: কিছু  ভাইরাস  যেমন  Adenovirus  চোখে  সংক্রমণ  সৃষ্টি  করতে  পারে।  যা দ্রুততার সাথে ছড়াতে পাড়ে। তাই অবশ্যই আমাদের চোখ উঠলে করনীয় গুলো মানা উচিৎ।
    এলার্জি:
    • এলার্জি সাধারণত ছড়ায় না। তবে যে ব্যক্তি একটি এলার্জি রোগের মধ্যে আক্রান্ত হয়, তার চোখে লালভাব ও ফুলে যাওয়া দেখা দিতে পারে। এটি সাধারণত পরিবেশগত অ্যালার্জেনের জন্য হয়ে থাকে। এটি ছড়িয়ে পড়ারো সম্ভাবনা রয়েছে।

    চোখ উঠলে করনীয়

    চোখ উঠলে কি করবেন বা আমদের প্রথমত কি করা উচিৎ তা হলো আয়নাতে ভালো করে দেখা অথবা পরিবার বা আশেপাশের কাওকে দেখানো যে চোখের পরিস্থিতি কেমন। আমার চোখে অসুস্থ বোধ হলে তা আগে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তারপর আমাদের শনাক্ত করতে হবে যে আমাদের চোখের প্রদাহ বা চোখ উঠেছে কিনা। তারপর আমাদের উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

    চোখ-উঠলে-করনীয়
    চোখ পরিষ্কার রাখা
    • হালকা লবণ পানি: গরম লবণ পানিতে একটি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ভিজিয়ে চোখ পরিষ্কার করুন। এটি চোখ উঠা কমাতে সাহায্য করবে।
    • অবশ্যই হাত ধোয়া: চোখে হাত স্পর্শ করার আগে এবং পরে হাত ভালোভাবে ধুয়া নিতে হবে। হাত ধোয়ার সময় চাইলে সাবান ব্যবহার করতে পারেন।
    ২. ঠান্ডা কম্প্রেস ব্যবহার
    • ঠান্ডা কম্প্রেস: ঠান্ডা পানির মধ্যে একটি কাপড় ভিজিয়ে চোখে ব্যবহার করুন। এটি চোখের ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করবে।
    ৩. পর্যাপ্ত বিশ্রাম
    • পর্যাপ্ত ঘুম: পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করতে হবে। এটি চোখের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর এই পরিস্থিতে পর্যাপ্ত ঘুমানো উচিৎ।
    ৪. চোখের পণ্য ব্যবহার
    • অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ড্রপস: অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বা এলার্জি ড্রপস ব্যবহার করতে পারেন আর্টিফিশিয়াল টিয়ার ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো ফার্মেসিতে লুবজেল, ড্রাইলাইফ বা টিয়ারফ্রেশ নামে পাওয়া যায়। তবে ব্যবহার করার আগে চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া উচিত।
    • চশমা: চোখ উঠলে করনীয় যেসব করবেন তার মধ্যে বিশেষ কাজ হলো ঘরের বাইরে বা কারো সামনে গেলে অবশ্যই সানগ্লাস বা কালো চশমা ব্যবহার করবেন।

    আবার অনেকে জানতে চাই, বাচ্চাদের চোখ উঠলে করণীয় কি? বাচ্চাদের জন্য প্রাথমিক কাজ গুলোই করতে হবে।। যদি সমস্যা গুরুতর বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে চক্ষু বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করতে হবে। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে উপযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ করুন। কারন বাচ্চাদের বোঝানোর ক্ষমতা কম থাকে।

    চোখ উঠলে কি খাবেন?

    চোখ উঠলে যা করা উচিৎ তা ভালো ভাবে যেনে আমাদের এই সময় কি কি খাওয়া দরকার তা মেনে চলতে হবে। কারন এই সব ভাইরাস জনিত রোগ বা চর্মরোগ গুলো অনেক সময় খাবার বা আমাদের খাওয়া-দাওয়ার ওপর নির্ভর করে। বিশেষ করে আমরা যখন এই রোগে আক্রান্ত অবস্থায় থাকবো তখন খাবার গুলো একটু মেনে খেতে হবে। যেসব খাবার খেতে হবেঃ

    • ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার:
      • সবুজ শাকসবজি: পালংশাক, কলা, ব্রকলি।
      • ফলমূল: কমলা, স্ট্রবেরি, লেবু।
      • ভিটামিন সি চোখ উঠা কমাতে সাহায্য করে থাকে।
    • ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার:
      • গাজর: এটি খেলে চোখের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
      • মিষ্টি আলু: এটি ভিটামিন এ-এর একটি ভালো উৎস।
      • ডার্ক সবুজ শাক: পালং শাক, মেথি ইত্যাদি।
    • ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড:
      • মাছ: স্যামন ফিস, টুনা ফিস, মাকরেল।
      • চিয়া বীজ: এটি চোখের শুষ্কতা কমাতে সাহায্য করে থাকে।

    আরও পড়ুনঃ শারীরিক ফিটনেস বজায় রাখতে করনীয়

    • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার:
      • বেরি: ব্লুবেরি, রাস্পবেরি।
      • নাটস: আখরোট, বাদাম ও বিভিন্ন রকম বাদাম।
    • পর্যাপ্ত পানি পান করা:
      • চোখের শুষ্কতা কমাতে এবং শরীরের হাইড্রেশন ঠিক রাখার জন্য পানির কোনো বিকল্প নেই।

    চোখ উঠলে করনীয় গুলোর মধ্যে দৈনিক খাবারগুলো একটু মেইনটেন করা উচিৎ। তাহলে আমাদের দ্রুত এই রোগের নিরাময় হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে কিছু খাবার আপনার আরাম এবং সুস্থতার জন্য সহায়ক হতে পারে। এ ছাড়াও চোখ উঠলে কিছু কিছু খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। তাহলে তা আমাদের শারীরিক অবস্থার জন্য উপকারী হবে।

    চোখ উঠলে কি কি খাওয়া যাবে না?

    চোখ উঠলে কি করতে হয়? আমাদের চোখের প্রদাহ শনাক্ত করে অবশ্যই এর যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। এটি যেহেতু অল্প কয়েকদিন এর মধ্যে একাকি ভালো হয়ে যায়। তবে এই রোগ যতদিন থাকবে ততদিন একটু সতর্ক থাকতে হবে যাতে এটি ছড়াতে না পারে। এ জন্য যেমন পুষ্টিকর খাওয়া-দাওয়া করতে হয় ঠিক তেমনি কিছু খাবার মেনে চলতে হয়। অর্থাৎ না খাওয়া উত্তম। সেগুলো হলোঃ

    ১. অতিরিক্ত লবণ
    • ফাস্ট ফুড: যেমন চিপস, বার্গার এবং প্রক্রিয়াজাত করা কোনো খাবার।
    • প্যাকেটজাত স্যুপ এবং সস: এতে উচ্চ মাত্রায় সোডিয়াম ব্যবহার হয়। যা চোখের ফোলাভাব বাড়িয়ে তুলতে পারে।
    ২. উচ্চ-সক্রিত খাবার
    • মিষ্টি খাদ্য: ক্যান্ডি বা চকলেট, কেক, ডোনাট এবং কোমল পানীয়।
    • প্রক্রিয়াজাত খাবার: যেকোনো বেকড গুডস এবং বিভিন্ন ধরনের স্ন্যাকস যা চিনি বা কার্বোহাইড্রেট ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
    ৩. স্পাইসি বা তীব্র খাবার
    • ঝাল মশলা: অতিরিক্ত ঝাল খাবার যেমন হট সস, তীব্র মশলা খাওয়া যাবে না।
    • মশলাদার খাবার: খুব তীব্র মশলার ব্যবহার চোখের প্রদাহ বাড়াতে পারে।

    আরও পড়ুনঃ চুলকানিতে যেভাবে নিমপাতা ব্যবহার করবেন

    ৪. ফ্যাটি খাবার
    • ভাজা খাবার: যেমনঃ পেয়াজি বা বেগুনি, ভাজা আলু, ভাজা চিকেন ইত্যাদি।
    • ট্রান্স ফ্যাট: এই ধরনের ফ্যাট এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার চোখের সমস্যা বাড়াতে পারে।
    ৫. অ্যালকোহল
    • অ্যালকোহল: অ্যালকোহল চোখের শুষ্কতা বাড়াতে পারে। এমনকি চোখ উঠার লক্ষণ বৃদ্ধি করতে পারে।
    ৬. ক্যাফেইন
    • ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়: কফি এবং কিছু শক্ত পানীয়। অতিরিক্ত ক্যাফেইন চোখের প্রদাহ বা চোখজ উঠা বাড়াতে পারে।
    ৭. অ্যালার্জেনিক খাবার
    • খাবারের অ্যালার্জেন: যদি আপনার চোখের সমস্যা এলার্জির কারণে হয়ে থাকে, তবে সেই অ্যালার্জেনিক খাবার অর্থাৎ আপনার যেসব খাবারে এলার্জি রয়েছে সেই খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

    চোখ উঠার ঘরোয়া চিকিৎসা

    চোখ উঠলে যা করা উচিৎ তার মধ্যে অন্যতম আমাদের ঘরে বা বাড়িতেই কিছু পদক্ষেপ নেওয়া। কারন চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা অনেকটা উপকারে আসতে পারে। আমাদের এই চোখের প্রদহ দেখা দিলে মূলত বাড়িতেই এর প্রতিকার করতে হবে। চোখ উঠলে করনীয় যেগুলো রয়েছে তার মধ্যে এই ঘরোয়া চিকিৎসা প্রথমে করতে হবে। নিম্নে কিছু ঘরোয়া উপায় দেওয়া হলোঃ

    চোখ-উঠলে-করনীয়-কি
    কম্প্রেসঃ

    1. ঠান্ডা কাপড়ঃ একটি কাপড় ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে তা চোখে প্রয়োগ করতে হবে। এটি চোখ ফোলা কমায়। 
    2. গরম কাপড়ঃ একটি কাপড় পরিষ্কার করে গরম পানি দিয়ে ভিজিয়ে চোখে রাখুন। এই গরম কাপড় চোখের শুষ্কতা বা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।

    জেল, মধু বা চাঃ

    1. জেলঃ পরিষ্কার করে কাটা অ্যালোভেরা পাতা থেকে জেল নিয়ে তা চোখের উপর দিন। এটি প্রদাহ কমাতে এবং চোখের স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
    2. মধুঃ চোখ উঠলে মধু ব্যবহার করতে পারেন। তবে এটি ব্যবহার করার আগে এর প্যাচ টেস্ট করে নিতে হবে। যাতে এলার্জিক প্রতিক্রিয়া না হয়।
    3. চাঃ ক্যামোমাইল চা ব্যবহার করা যেতে পারে। ঠান্ডা ক্যামোমাইল চা চোখের উপর প্রয়োগ করা যাবে কারন ক্যামোমাইল চোখের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।

    চোখ উঠলে যা করা উচিৎ আমরা সে সম্পর্কে অনেকখানি অবগত হয়েছি। তবে আমাদের এই পরিস্থিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে হাত পরিষ্কার রাখা। কারন আমাদের এই সময় চোখ খচখচ করে বা চুলকাতে পারে। আর তখন আমরা হাত দিয়েই করে থাকি। তাই চোখকে জীবানু মুক্ত রাখতে হাত অবশ্যই পরিষ্কার রাখবো।

    চোখ উঠার উপকারিতা ও অপকারিতা

    চোখ উঠলে কি করবেন বা চোখ উঠলে কি করতে হয় এগুলো জানা যেমন আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ । আমরা জানি এর অপকারিতা রয়েছে। ঠিক তেমনি এর উপকারিতা রয়েছে কি না বা থাকলেও সেগুলো কি সেটিও জানতে হবে। তো চলুন সেগুলো কি তা জেনে নেওয়া যাক।

    উপকারিতাঃ

    • রোগ সনাক্তকরণ: চোখ প্রদাহের মাধ্যমে শরীরের অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন, ডায়াবেটিস বা অন্যান্য রোগের লক্ষণগুলো শনাক্ত করা যেতে পারে।
    • চিকিৎসা: চোখের প্রদাহ একটি সংকেত হতে পারে। যা অন্যান্য সমস্যা হলে যেমন এলার্জি, সংক্রমণ বা অন্যান্য চোখের রোগ তবে এটি দ্রুত চিকিৎসা শুরু করার সুযোগও হতে পারে।
    • প্রতিরোধ ক্ষমতা: প্রদাহ প্রক্রিয়া শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সক্রিয় করতে সহায়ক হতে পারে। যা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম।

    অপকারিতাঃ

    • অস্বস্তি ও ব্যথাঃ চোখের প্রদাহ সাধারণত লালভাব, ফুলে যাওয়া, চুলকানি, এবং ব্যথার সৃষ্টি করে, যা দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
    • দৃষ্টির সমস্যাঃ গুরুতর প্রদাহ বা সংক্রমণ চোখের দৃষ্টি ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যা ঝাপসা দেখা বা অন্যান্য দৃষ্টির সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
    • সংক্রমণ ছড়ানোঃ চোখের প্রদাহ বা সংক্রমণ দ্রুত অন্যান্য ব্যক্তির মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে, বিশেষ করে যদি এটি ভাইরাল বা ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের কারণে হয়।

    চোখ উঠলে কি করবেন তা আমরা ইতো মধ্যে জেনেছি। এমনকি এর উপকারিতা বা অপকারিতা সম্পর্কে ধারনা পেলাম। এই চোখ উঠা রোগের ফলে উপকারিতা খুবই নগণ্য। এর অপকারিতা বেশি। যেহেতু এটি একটি রোগ তাই রোগের কোনো উপকারিতা নেই এটি আমরা জানি।

    শেষকথা

    চোখ উঠলে করনীয় কি সবকিছুই বিস্তারিত আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি। আসলে এই রোগটা আমাদের কাছে অনেক কমন এক রোগ। তাই এর প্রতিকার বা প্রতিরোধ কিভাবে করবো তা জানা আমাদের সকলের জন্য অবশ্যক।

    শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি আপনারা আজকের এই স্বাস্থ্য বিষয়ক পোস্টটি পড়ে অনেক উপকৃত হয়েছেন। আজকের এই পোস্টটি যদি আপনাকে ভালো লেগে থাকে তাহলে এই ওয়েবসাইট টি ফলো করতে পারেন।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    এম এম আই ২২ আইটি ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url