রূপচর্চায় দুধের ব্যবহার জেনে নিন

রূপচর্চায় দুধের ব্যবহার কিভাবে করবেন আপনি কি তা জানেন? আপনি যদি এটি না জেনে থাকেন বা আপনি যদি এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অবশ্যই সাথে থাকবেন।

রূপচর্চায়-দুধের-ব্যবহার

ত্বকে দুধ ব্যবহারের নিয়ম আমাদের অনেকের অজানা। আপনার এটি জানা প্রয়োজন যদি আপনি আপনার চেহারা নিয়ে খুব যত্নশীল হয়ে থাকেন। আমরা রুপের যত্নে দুধ এই বিষয় নিয়ে আজকের পোস্টে আলোচনা করবো, যা আপনার উপকারে আসতে পারে।

পোস্ট সুচিপত্রঃ রূপচর্চায় দুধের ব্যবহার - কিভাবে ত্বকে দুধ ব্যবহার করে

রূপচর্চায় দুধের ব্যবহার

রূপচর্চায় দুধের ব্যবহার অনেকে করে থাকে। ত্বকে দুধ ব্যবহারের নিয়ম অনেক রয়েছে। আমরা বিভিন্ন ভাবে আমাদের রূপচর্চায় দুধ ব্যবহার করতে পারি। আমরা জানি দুধের অনেক ভিন্নতা রয়েছে। ভিন্নতা বলতে আমরা দুধ কয়েকভাবে দেখতে পাই বা ব্যবহার করে থাকি। যেমনঃ কাঁচা দুধ, জ্বাল দেওয়া বা গরম করার পর দুধের সর, গুড়া দুধ। এর যেমন বিভিন্ন ধরন রয়েছে ঠিক তেমনি এর ব্যবহারেরও বিভিন্ন ধরন বা মাধ্যম রয়েছে।

কিভাবে ত্বকে দুধ ব্যবহার করে? এর উত্তর আমরা আগের প্যারাতেই জানতে পেরেছি। এর মানে দুধের ধরন যেমন আমরা ঠিক সেভাবে দুধ আমাদের মুখে ব্যবহার করতে পারবো। অর্থাৎ আমরা দুধ কাঁচা অবস্থায় ব্যবহার করতে পারবো, আমরা এই দুধের সর ব্যবহার করতে পারবো অথবা আমরা চাইলে বাজারে কিনে পাওয়া যায় গুড়া দুধও ব্যবহার করতে পারি।

রুপের যত্নে দুধ খুবই উপকারী। দুধ যেমন আমাদের শরীর বা সুস্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ঠিক আমদের ত্বক বা মুখের জন্য অনেক উপকারী। কিন্তু আমদের এর ব্যবহারের সঠিক নিয়ম-কানুন গুলো জানতে হবে। শুধু জানলে হবে না, সেগুলো জেনে আমাদের এর সঠিক ব্যবহার বাস্তবায়ন করতে হবে। তাহলে আমরা রূপচর্চায় দুধের ব্যবহার এর উপকার লক্ষ্য করতে পারবো বা জানতে পারবো।

দুধ মূলত কোথায় ব্যবহৃত হয়?

দুধ মূলত কোথায় ব্যবহৃত হয় আমরা জানি। রূপচর্চায় দুধের ব্যবহার আজকে আমরা বিস্তারিত জানবো। তো তার আগে জানার চলুন আমরা জেনে  নিই দুধের মৌলিক ব্যবহার গুলো। দুধ হলো একটি খাবার। যেটি আমরা আমাদের পুষ্টির জন্য খেয়ে থাকি। কিন্তু বর্তমান সবকিছু উন্নত হওয়ার সাথে সাথে এই দুধের ব্যবহারও অনেক বেড়েছে। অর্থাৎ এর ব্যবহারের অনেক ধরন বের হয়েছে।

আমরা এখন দুধ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে থাকি। যেহেতু এটি একটি খাবার জিনিস তাই আমরা এটি খাবার হিসেবে ব্যবহার করে থাকি। আমরা দুধ দিয়ে অনেক রকমের খাবার বানিয়ে থাকি। আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কি কি কাজে এই দুধ বিভিন্ন ভাবে ব্যবহার করে থাকি তা হলোঃ

১. খাবার প্রস্তুতিতেঃ
    ডেইরি প্রোডাক্টস
    বেকিং পন্য
    বিভিন্ন পানীয় খাবার
২. স্বাস্থ্যগত উপকারিতায়ঃ
    পুষ্টিগত
    চিকিৎসা অর্থাৎ ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণে
৩. বাণিজ্যিক ব্যবহারেঃ
    দুধের পাউডার তৈরি করে
    ফার্মাসিউটিক্যালস বা ওষুধ তৈরিতে
৪. রূপচর্চায়ঃ
    মাস্ক ও স্ক্রাব তৈরি করে
    গোসলে, ইত্যাদিতে।

কাঁচা দুধ মুখে মাখার নিয়ম

কাঁচা দুধ মুখে মাখার নিয়ম আমাদের অনেকের অজানা। ত্বকে দুধ ব্যবহারের নিয়ম গুলোর মধ্যে আমরা ইতোমধ্যে জেনেছি কাঁচা দুধ ব্যবহার করা। আমরা কাঁচা দুধকে বিভিন্ন ভাবে ব্যবহার করতে পারি। কিন্তু আমরা এখন মূলত জানবো এই কাঁচা দুধ মুখে কিভাবে ব্যবহার করা যায়, মুখে ব্যবহারের নিয়ম। যা আমরা ব্যবহার করতে পারলে আমরা এর বিশেষ উপকারিতা ভোগ করতে পারবো বা লক্ষ্য করতে পারবো।

আরও পড়ুনঃ অলিভ অয়েল তেল ব্যবহারের নিয়ম

  • সরাসরি কাঁচা দুধ যেভাবে ব্যবহার করবেন:

  1. দুধ প্রস্তুত করুন: একটি পরিষ্কার কাপ বা বাটি নিন। এরপর তাতে আপনার প্রয়োজন মতো কাঁচা দুধ ঢেলে নিন।
  2. বিষয়বস্তু প্রস্তুত করুন: তুলার সাহায্যে দুধটি তুলতে প্রস্তুত বা চেষ্টা করুন।
  3. মুখে লাগান: তুলার সাহায্যে দুধটি মুখের সমস্ত অংশে ভালোভাবে লাগান। চোখের চারপাশে খুব সাবধানে লাগাতে হবে।
  4. ম্যাসাজ করুন: দুধটি ত্বকে আলতোভাবে ম্যাসাজ করুন। যাতে দুধটি ত্বকের মধ্যে ভালোভাবে মিশে যায়।
  5. অপেক্ষা করুন: দুধটি মুখে ১৫-২০ মিনিট দিয়ে রাখুন।
  6. ধোয়া: তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে ফেলুন।

উপরে উল্লেখিত কাঁচা দুধ মুখে দেওয়ার নিয়মগুলো আমাদের জেনে থাকা উচিৎ। আসলে কোন জিনিস কখন দরকারি হয়ে যায়, আমরা কেও বলতে পারবো না। তাই আমাদের সকল বিষয়ে একটু হলে জেনে থাকা প্রয়োজন। আপনারা এই মুখে কাঁচা দুধ ব্যবহার করতে চাইলে উপরের নিয়ম অনুসরন করতে পারেন, তাহলে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল নিজে দেখতে পাবেন।

মুখে দুধ মাখলে কি হয়?

মুখে দুধ মাখলে কি হয় এটা অনেকে জানতে চাই। রূপচর্চায় দুধের ব্যবহার করলে অনেক উপকারে আসতে পারে। আমরা সবাই জানি এই দুধ অনেক পুস্তিসম্পন্ন ও গুনগত উপাদান সম্পন্ন। এটি খেলে যেমন আমাদের উপকাররের শেষ নাই, ঠিক তেমন এর বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহারও অনেক উপকারী। আর এর ব্যবহার যদি রূপচর্চাই করা যায় তাহলে সেটারও অনেক উপকার রয়েছে। কিন্তু সেগুলো আমাদের জানতে হবে। আর জেনে তা কাজে লাগাতে হবে।

আরও পড়ুনঃ চোখ উঠলে যা করবেন

রুপের যত্নে দুধ ব্যবহার করলে কিছু উপকারিতা হতে পারে। বিশেষ করে ত্বকের যত্নে। দুধে ল্যাকটিক অ্যাসিড থাকে। যা ত্বককে ময়শ্চারাইজ করতে সহায়ক। এটি ত্বককে নরম এবং মসৃণ করতে সাহায্য করে এবং কিছু ক্ষেত্রে ত্বকের উজ্জ্বলতাও বাড়াতে পারে। এছাড়াও দুধের প্রোটিন এবং ভিটামিনগুলো ত্বককে পুষ্টি প্রদান করে। যা আমাদের ত্বক কে বা আমাদের চেহারা কে খুবই ভালো রাখতে সহয়তা করে থাকে। 

তাছাড়া দুধে রয়েছে বায়োটিন, ফসসরাস, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, সেলেনিয়াম। আর দুধ খেলে এগুল আমাদের শরীরকে অনেক ঠিক রাখতে সাহায্য করে থাকে। শুধু আমাদের শরীর কে ভালো রাখতে নয়, এটি আমাদের মুখে মাখলে আমাদের মুখ ও ত্বক কেও ভালো রাখতে কাজ করে থাকে। এতে বিদ্যমান ভিটামিন A ও ভিটামিন B2 (রিবোফ্ল্যাভিন) আমাদের ত্বকে স্বাস্থের জন্য অনেক সহায়তাকারী।

দুধের সর মুখে দিলে কি হয়?

দুধের সর মুখে দিলে কি হয় এটাও অনেকে জানতে চাই। রূপচর্চায় দুধের ব্যবহার অনেক উপকারী তা আমরা আসতে আসতে আজকের এই পোস্ট থেকে জানার জানার চেষ্টা করছি। রুপের জন্য যেমন দুধের অনেক উপকার রয়েছে, ঠিক এই দুধের সরেরও অনেক উপকারিতা রয়েছে। আমারা সবাই জানি দুধের সর কিভাবে হয় বা কিভাবী এটি আমরা পাবো। সেই সরকে যদি আমরা আমাদের রূপচর্চাই ব্যবহার করতে পারি, তাহলে এর গুন আমরা আমাদের ত্বকের জন্য লক্ষ্য করতে পারবো।

রূপচর্চায়-দুধের-ব্যবহার

দুধের সরের (মিষ্টি দুধের পুরু অংশ) ব্যবহারের পদ্ধটি অনেক রয়েছে। এমনকি এর উপকারিতাও অনেক রয়েছে। কিন্তু দুধের সরের বিশেষ ও ব্যবহৃত কিছু পদ্ধতি রয়েছে, যেগুলো খুবই উপকারে আসতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম হলোঃ ফেস মাস্ক, এক্সফোলিয়েটর, ময়শ্চারাইজার, প্যাকিং তৈরি করে ব্যবহার করা। তো চলুন এই পদ্ধটি গুলো কিভাবে ব্যবহার করবেন সেগুলো জেনে নেওয়া যাক।

ফেস মাস্কঃ দুধের সরের একটি ছোট পরিমাণ বা অংশ মুখে লাগিয়ে 15-20 মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে 2-3 বার এটি আপনার মুখে ব্যবহার করতে পারেন।
এক্সফোলিয়েটরঃ দুধের সরের সাথে এক চামচ চিনি মিশিয়ে ত্বকে ঘষুন। এটি ত্বকের মৃত কোষগুলো মুছে ফেলতে সহায়তা করবে। আর এটি ত্বককে মসৃণ করবে।
ময়শ্চারাইজারঃ রাতে ত্বক পরিষ্কার করার পর দুধের সর সরাসরি ত্বকে লাগিয়ে রেখে দিতে পারেন। এটি ত্বককে ময়শ্চারাইজ করতে খুবই সহায়ক। 
প্যাকিংঃ দুধের সরকে বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদানের সাথে মিশিয়ে মুখে ব্যবহার করতে পারেন। সরের সাথে মধু, হলুদ, লেবুর রস ইত্যাদি প্রাকৃতিক উপাদনের সাথে কম্বিনেশন করে ব্যবহার করা যায়।

রূপচর্চায় দুধ ও কাঁচা হলুদের ব্যবহার

রূপচর্চায় দুধ ও কাঁচা হলুদের ব্যবহার করলে অনেক কাজে আসবে। ত্বকে দুধ ব্যবহারের নিয়ম গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো কাঁচা হলুদ ও দুধ একসাথে ব্যবহার করা।রূপচর্চায় দুধ ও কাঁচা হলুদের ব্যবহার অত্যন্ত জনপ্রিয়। এই দুধের সাথে কাঁচা হলুদ প্রাচীনকাল থেকে ত্বক সুস্থ এবং উজ্জ্বল রাখার জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই দুই উপাদানই ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে খুবই কার্যকরী। কিন্তু আমাদের এর ব্যবহারের পদ্ধতি গুলো জানতে হবে।

আমরা আজকের পোস্ট থেকে ইতোমধ্যেই জেনেছি দুধের বিভিন্ন রকম উপকারিতা। আর আমরা অনেকে জানি যে শুধু হলুদ মুখে মাখারও অনেক উপকারিতা রয়েছে। আবার অনেক বিভিন্ন কারনে বা ফেসের অগ্রগতির জন্য বিভিন্ন সময় কাঁচা হলুদ ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু অনেকে এই কাঁচা হলুদ্দ মুখে মাখার উপকারিতা জানি না। তো চলুন সেগুলো জেনে নিই।

আরও পড়ুনঃ কালোজিরা কেন খাবেন?

কাঁচা হলুদের উপকারিতা:

এন্টি-ইনফ্লেমেটরি: হলুদের মধ্যে কারকিউমিন নামক উপাদান থাকে যা আমাদের শরীর ব ত্বকের প্রদাহ কমাতে সহায়ক।
এন্টি-অক্সিডেন্ট: হলুদের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য ত্বকের ক্যালম এবং তাজা ভাব ধরে রাখতে সাহায্য করে থাকে।
উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি: হলুদের প্রাকৃতিক গুণ ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক।

এখন চলুন জেনে নেওয়া যাক দুধ ও কাঁচা হলুদের ব্যবহারের পদ্ধতিঃ

ফেস প্যাক:
উপকরণ: দুধ ও কাঁচা হলুদের পেস্ট
পদ্ধতি: কাঁচা হলুদের পেস্ট ২-৩ চা চামচ দুধের সাথে মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াবে এবং ত্বককে মসৃণ করতে সাহায্য করবে।
ফেস ক্লিনজার:
উপকরণ: দুধ ও কাঁচা হলুদের পাউডার
পদ্ধতি: দুধের সাথে একটু হলুদের পাউডার মিশিয়ে একটি প্রাকৃতিক ক্লিনজার তৈরি করুন। এটি মুখে লাগিয়ে হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন এবং কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বককে পরিষ্কার ও সতেজ রাখতে সহায়ক।
এক্সফোলিয়েটর:
উপকরণ: কাঁচা হলুদের পেস্ট ও দুধ
পদ্ধতি: কাঁচা হলুদের পেস্টের সাথে দুধ মিশিয়ে একটি স্ক্রাব তৈরি করুন। এটি ত্বকে প্রয়োগ করে হালকা হাতে ঘষুন এবং পরে ধুয়ে ফেলুন। এটি মৃত কোষ মুছে ফেলতে এবং ত্বককে মসৃণ করতে সহায়ক।
পিগমেন্টেশন হালকা করা:
উপকরণ: দুধ ও কাঁচা হলুদের পেস্ট
পদ্ধতি: পিগমেন্টেশন বা দাগের উপর হলুদের পেস্ট এবং দুধের মিশ্রণ লাগান। ২০ মিনিট মতো রেখে ধুয়ে ফেলুন।

দুধ দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

দুধ দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে এখন জানবো। কিভাবে ত্বকে দুধ ব্যবহার করে? এটি আমাদের অনেকের প্রশ্ন। আর এই প্রশ্নের উদ্দেশ্যই হলো ফর্সা হওয়া বা চাহারায়, ত্বকে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করা। কিন্তু আমরা যদি দুধ দিয়ে ফর্সা হওয়ার পদ্ধতি বা মাধ্যম গুলো না জেনে থাকি তাহলে কিন্তু আমরা এই দুধ ব্যবহার করে ফর্সা হতে পারবো না। এমনকি ভুল ব্যবহারের ফলে আমাদের ক্ষতি বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। উপরে বেশ কয়েকটি ব্যবহার জেনেছি। এখন কয়েকটি পদ্ধতি জেনে নেওয়া যাক।

১. দুধ ও লেবুর রস:
উপকরণ: দুধ, লেবুর রস
পদ্ধতি: ২ টেবিল চামচ দুধের সাথে ১ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। এটি মুখে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট মতো রেখে দিন। লেবুর রস ত্বকের দাগ হালকা করতে সহায়ক এবং দুধ ত্বককে ময়শ্চারাইজ করে।

আরও পড়ুনঃ চুলকানিতে নিমপাতার ব্যবহার

২. দুধ ও বেসন :
উপকরণ: ২ টেবিল চামচ করে বেসন ও কাঁচা দুধ
পদ্ধতি: একটি বাটিতে বেসন এবং দুধ মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। পেস্টটি মুখে লাগান এবং ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন। শুকিয়ে গেলে গরম পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন। সপ্তাহে ২-৩ বার এই প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। এটি ত্বককে পরিষ্কার ও পুষ্টি প্রদানে সহায়ক।
৩. দুধ ও গোলাপ জল:
উপকরণ: দুধ, গোলাপ জল
পদ্ধতি: ২ টেবিল চামচ দুধের সাথে ১ টেবিল চামচ গোলাপ জল মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। এটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট মতো রেখে এরপর ধুয়ে ফেলুন। গোলাপ জল ত্বককে শীতল করে এবং দুধ ত্বককে পুষ্টি দেয়।
৪. দুধ ও কলা
উপকরণ: ১টি পাকা কলা, ২ টেবিল চামচ কাঁচা দুধ
পদ্ধতি: একটি পাকা কলাকে ভালোভাবে ম্যাশড করে নিন। এতে ২ টেবিল চামচ কাঁচা দুধ মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন। তারপর ঠান্ডা বা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।

গুড়া দুধ মুখে দিলে কি হয়?

গুড়া দুধ মুখে দিলে কি হয়? চলুন সেটি জানা যাক। ত্বকে দুধ ব্যবহারের নিয়ম গুলোর মধ্যে আমরা এখন জানবো গুড়া দুধ ত্বকে বা মুখে দিলে কি হয়? অর্থাৎ এর উপকারিতা কি রয়েছে ও এর ব্যবহারের নিয়ম এবং পদ্ধতিগুলো। আমরা এই গুড়া দুধ মূলত খাবার জন্য ব্যবহার করে থাকি। আর এটি খাবার হিসেবে বাজারজাতকরণ হয়ে থাকে। যা আমারা পানি দিয়ে খাওয়ার সাথে সাথে অন্যান্য ডিশ তৈরিতে ব্যবহার করি। তো চলুন মুখে এর ব্যবহার জেনে নিই।

রূপচর্চায়-দুধের-ব্যবহার
ফেস প্যাক:
উপকারিতা: ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং ত্বককে সতেজ রাখে।
উপকরণ: ২ টেবিল চামচ গুড়া দুধ ও ১ টেবিল চামচ টমেটো জুস
পদ্ধতি: গুড়া দুধ এবং টমেটো জুস মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এরপর মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিতে হবে। পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
ফেস মাস্ক:
উপকারিতা: টি ত্বকের মৃত কোষগুলোকে মুছে ফেলবে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করবে।
উপকরণ: ২ টেবিল চামচ গুড়া দুধ, ১ টেবিল চামচ চিনি, ১ টেবিল চামচ দই
পদ্ধতি: গুড়া দুধ, চিনি, এবং দই একত্রিত করে একটি প্যাক তৈরি করুন। মুখে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
স্ক্রাব:
উপকারিতা:এটি ত্বকের মৃত কোষগুলো মুছে ফেলবে এবং ত্বককে মসৃণ করবে।
উপকরণ: ২ টেবিল চামচ গুড়া দুধ, ১ চা চামচ বেসন
পদ্ধতি: গুড়া দুধ ও বেসনের মিশ্রণে একটি স্ক্রাব তৈরি করুন। এটি মুখে লাগিয়ে হালকা করে ম্যাসাজ করুন। এরপর ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
ময়শ্চারাইজিং প্যাক:
উপকারিতা: এটি ত্বককে গভীরভাবে ময়শ্চারাইজ করবে।
উপকরণ: ৩ টেবিল চামচ গুড়া দুধ, ১ টেবিল চামচ নারকেল তেল
পদ্ধতি: গুড়া দুধ এবং নারকেল তেল মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করতে হবে। মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট মতো রাখুন। তারপর ধুয়ে ফেলুন।

ত্বকের যত্নে মধু ও দুধ, এবং সাবধানতা

ত্বকের যত্নে মধু ও দুধ, এবং সাবধানতা এসব সম্পর্কে এখন জানা যাক। ত্বকের বা রুপের যত্নে দুধ ব্যবহারের যেমন অনেক উপকারিতা রয়েছে, তেমন রুপের যত্নে দুধ ও মধু ব্যবহারেরও অনেক উপকারিতা রয়েছে। আমরা এখন জনবো দুধ ও মধু ব্যবহার করলে উপকারিতা ও পদ্ধতি। আমরা উপরে অনেক পদ্ধতি ও ব্যবহার জেনেছি, কিন্তু রূপচর্চায় দুধের ব্যবহার করলে এর সতর্কতা, সাবধানতা বা ক্ষতিকর দিক গুলো জানিনি। তো চলুন সেগুলো জেনে নিই।

পদ্ধতি নং ১ঃ
উপকরণ: ২ টেবিল চামচ দুধ, ১ টেবিল চামচ মধু
পদ্ধতি: দুধ ও মধু মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে সেটি মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রাখতে হবে। এরপরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বককে ময়শ্চারাইজ করতে এবং উজ্জ্বল করতে সহায়ক।
পদ্ধতি নং ২ঃ
উপকরণ: ১ টেবিল চামচ দুধ, ১ টেবিল চামচ মধু এবং ১ টেবিল চামচ বেসন
পদ্ধতি: দুধ, মধু এবং বেসন মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে সেটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রাখুন এবং কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের মৃত কোষগুলো মুছে ফেলবে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করবে।
পদ্ধতি নং ৩ঃ
উপকরণ: ২ টেবিল চামচ দুধ, ১ টেবিল চামচ মধু এবং ১ চা চামচ চিনি
পদ্ধতি: দুধ, মধু এবং চিনি মিশিয়ে একটি স্ক্রাব তৈরি করুন। এটি মুখে হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন এবং অল্প সময় পর মুখ পরিষ্কার করুন। এটি ত্বকের মৃত কোষগুলো মুছে ফেলবে এবং ত্বককে পরিষ্কার ও মসৃণ করবে।
পদ্ধতি নং ৪ঃ
উপকরণ: ৩ টেবিল চামচ দুধ, ১ টেবিল চামচ মধু এবং ১ টেবিল চামচ নারকেল তেল
পদ্ধতি: দুধ, মধু এবং নারকেল তেল মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রাখুন এবং পরে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বককে ভালোভাবে ভাবে নরম করবে।

সাবধানতাঃ

আমরা রূপচর্চার ক্ষেত্রে দুধ ব্যবহার করতে পারি। এর অনেক উপকারিতা ও গুনাগুন রয়েছে। যার ফলে আমরা যদি এটি ব্যবহার করি তাহলে আমরা অনেক উপকৃত হতে পারবো। কিন্তু সবকিছুরই ভালমন্দ রয়েছে, উপকারিতা-অপকারিতা রয়েছে। আর এই দুধের ক্ষেত্রেও ছাড় নাই। তাই আমাদের এরর ক্ষেত্রেও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। চলুন এর কিছু সাবধানতা জেনে নেওয়া যাক।

  1. ত্বক পরীক্ষা করুন: দুধের প্রতি অ্যালার্জি আছে কিনা তা নিশ্চিত করতে করতে হবে।
  2. অতিরিক্ত ব্যবহার এড়িয়ে চলুন: দুধের প্যাকগুলো বেশিক্ষন রাখলে ত্বক শুষ্ক বা ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।
  3. পাস্তুরিত দুধের ব্যবহার করা: কাঁচা দুধে অনেক সময় ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। এজন্য প্রস্তুত করে নিতে হবে।
  4. ত্বক ধোয়ার পরে সতর্কতা: এমনভাবে ধুতে হবে যাতে কোনো অংশে দুধ না লেগে থাকে। নাহলে ব্রণ দেখা দিতে পারে।
  5. শীতল বা গরম দুধ ব্যবহার: অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা দুধ ব্যবহার কতা যাবে না। স্বাভাবিক অবস্থায় ব্যবহারর করুন।
  6. প্যাকের উপাদান নির্বাচন: প্যাকে ব্যবহৃত উপাদান ভালোমানের নিশ্চিত করতে হবে। যাতে কোনো ক্ষতি না হয়।
  7. স্বাস্থ্যগত অবস্থা: ত্বকে যদি অ্যাকনে, ফাঙ্গাল বা ইনফেকশন থাকে তাহলে দুধ বুবকার করা থেকে দূরে থাকতে হবে।

শেষকথা

ত্বকে দুধ ব্যবহারের নিয়ম গুলো আমরা জানলাম। আপনি যদি আপনার ত্বক বা চেহারা নিয়ে খুব সিরিয়াস হন বা সৌখিন হয়ে থাকেন তাহলে আপনি আপনার রূপচর্চার ক্ষেত্রে দুধ ব্যবহার করে এর উপকার গুলো উপভোগ করতে পারেন। আশা করি আজকের পোস্ট থেকে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। যা আপনার উপকারে আসতে পারে।

আজকের পোস্টের বিষয়বস্তু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। কোনো ভুলত্রুটি থাকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনি যদি এরকম উপকারিতা মুলক পোস্ট পড়তে বা জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে এই ওয়েবসাইট টি ফলো করতে পারেন। ধন্যবাদ।


    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    এম এম আই ২২ আইটি ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url